এবার রোজার মাস আবার দেশজুড়ে এখন মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে। চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এরই মধ্যে দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ঝালকাঠি ও গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের আগে এই সমস্যার সমাধানে সাধ্যমতো চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ করেই প্রকৃতিতে বেড়েছে গরমের অনুভুতি। দুর্বিষহ জনজীবন। এর সাথে দেশের অনেক স্থানেই শুরু হয়েছে লোডশেডিং। গাইবান্ধায় কয়েকদিন ধরে দিন-রাতে বিদ্যুৎ না থাকার উৎপাত চলছে। তার ওপর রমজানে দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। লোডশেডিং এর কারণে ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার কাজ।
ঈদের আগে এমন অবস্থায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মালিক-শ্রমিকরা। শ্রমিকরা জানান, ২ ঘণ্টা ৩ ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ আসে এরপর আধাঘণ্টা থেকে আবার চলে যায়। স্থানীয়রা জানান, সারাদিনে আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রাতেও একই সমস্যা থাকে।
তবে কি কারণে হঠাৎই লোডশেডিং সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পল্লী বিদ্যুৎ ও নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির কর্মকর্তারা। তীব্র লোডশেডিং-এ অতিষ্ট ঝালকাঠি জেলাবাসীও। জেলা শহর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলার পরিস্থিতি যেন ভয়াবহ।
সারাদিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন জীবন পার করতে হয়। একদিকে গরম অন্য দিনে রমজান সব মিলিয়ে হাশফাস অবস্থা। শ্রমিকরা জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে আমাদের কাজে বেঘাত হচ্ছে।
এদিকে ঝালকাঠির ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে বেড়েছে লোডশেডিং। তিনি বলেন, আমাদের একটি সিটি বিস্ফোরণ হয়েছিলো। সেটি প্রতিস্থাপন করতে আমাদের ২ দিন সময় লেগেছে। এরপর লাইন আবার স্বাভাবিক করা হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা জেলা সদরে অন্তত ৭ থেকে ৮ বার লোডশেডিং হচ্ছে। তবে উপজেলা পর্যায়ে দিনের অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। কুমিল্লা নগরীতে বুধবার বিকেল ৫টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮ বার লোডশেডিং হয়েছে। লোডশেডিংয়ে হাসপাতালগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম।
সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় এখন ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না। তিনটি কেন্দ্র বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলে লোডশেডিং বেড়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির সমকালকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সিলেটে ৫১ ভাগের ওপর লোডশেডিং করা হয়েছে।
ঈদের কেনাকাটা শুরুর পর লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভবনে আগে জেনারেটর চালাতে ২০-৩০ লিটার ডিজেল লাগলেও এখন ৬০-৮০ লিটার লাগছে বলে জানিয়েছেন ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটির সহকারী ব্যবস্থাপক সংকর দাস।
এদিকে বগুড়ায় অঞ্চলভেদে দিনে ২ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় এ জেলায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ ঘাটতি থাকছে। বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট। সরবরাহ মিলেছে ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট। দিন-রাতে ১৫ শতাংশ সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।